প্রতিবেদনের বিষয় :খনিজ তেল
দল: ০৪ ( ইফতেহাজ ইরফান সায়ন )
খনিজ পদার্থ :খনিজ তেল
অপরিশোধিত তেল বা খনিজ তেল (তরল সোনা) মূলত হাইড্রোকার্বন ও অন্যান্য কিছু জৈব যৌগের মিশ্রণ। এদের মধ্যে কার্বন ও হাইড্রোজেন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। অপরিশোধিত তেলকে ব্যবহার উপযোগী করার জন্য এর বিভিন্ন অংশকে আংশিক পাতন পদ্ধতিতে পৃথক করা হয়।পেট্রোলিয়ামে বিদ্যমান বিভিন্ন উপাদানের স্ফুটনাঙ্ক ভিন্ন ভিন্ন হয়। স্ফুটনাংকের উপর ভিত্তি করে তেল পরিশোধনাগারে পৃথকীকৃত বিভিন্ন অংশের নাম পর্যায়ক্রমে পেট্রলিয়াম গ্যাস,পেট্রোল (গ্যাসোলিন), ন্যাপথা, কেরোসিন, ডিজেল তেল, লুব্রিকেটিং তেল ও বিটুমিন। মিথেন ও ন্যাপথেন এবং এ্যারোমেটিক ক্রমের তরল হাইড্রোকার্বনের রাসায়নিক মিশ্রণই হচ্ছে খনিজ তেলাভূগর্ভ থেকে যে তরল জ্বালানি তোলা হয় তাকে পেট্রোলিয়াম বলে।
পেট্রোলিয়াম নামকরণ হয়েছে দুটি গ্রীক শব্দ "Petra" (rock) এবং oleum(oil) থেকে।এই কারণে পেট্রোলিয়ামকে অনেক সময় “rock oil” বা 'mineral oil' ও বলা হয়।আংশিক পাতন প্রক্রিয়ার অন্তর্গত বিভিন্ন ক্ষেত্রে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। শতকরা পরিমাণ (উপজাত): পেট্রলিয়াম গ্যাস: ২ ভাগ। পেট্রল : ৫ ভাগ। ন্যাপথা : ১০ ভাগ। কেরোসিন : ১৩ ভাগ। ডিজেল : ২০ ভাগ। লুব্রিকেটিং তেল : ২৫ ভাগ। বিটুমিন : ২৫ ভাগ
খনিজ তেল:বর্তমানে কোন কোন কোন কোন অঞ্চলে খনিজ তেল পাওয়া যায়? এমন কোন কোন অঞ্চল রয়েছে যেখানে পূর্বে খনিজ তেল পাওয়া যেত কিন্তু এখন পাওয়া যায় না? সেখানে তেল না পাওয়ার কারণ কি? পৃথিবীতে বর্তমানে খনিজ তেলের অবস্থা কিরূপ? বর্তমানে যে পরিমাণে খনিজ তেল পৃথিবীতে রয়েছে টা কি যথেষ্ট? ভবিষ্যত প্রয়োজনে কিভাবে তা রক্ষা করা যায়?
খনিজ তেল: বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ
খনিজ তেল হল একটি তরল জ্বালানি যা ভূগর্ভস্থ থেকে উত্তোলন করা হয়। এটি মূলত হাইড্রোকার্বন ও অন্যান্য কিছু জৈব যৌগের
মিশ্রণ। খনিজ তেল বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এটি পরিবহন, বিদ্যুৎ উৎপাদন, শিল্প ও কৃষিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়|
বর্তমানে যেসব অঞ্চলে খনিজ তেল পাওয়া যায়:
খনিজ তেলের বিশ্বের বৃহত্তম মজুদ রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব, ইরাক, ইরান ও কুয়েত এই অঞ্চলের প্রধান তেল উৎপাদনকারী
দেশ | এছাড়াও, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকায়ও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে খনিজ তেল পাওয়া যায়।
পূর্বে খনিজ তেল পাওয়া যেত কিন্তু এখন পাওয়া যায় না এমন অঞ্চল,
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় একসময় প্রচুর খনিজ তেল পাওয়া যেত। কিন্তু, তেলের মজুদ কমে যাওয়ায় সেখানে এখন তেল উত্তোলন
করা হয় না। রাশিয়ার ওরিয়েন্টাল সিবেরিয়া, চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, জার্মানির উত্তরাঞ্চল ও আফ্রিকার মাদাগাস্কার দ্বীপেও একসময় খনিজ
তেল পাওয়া যেত। কিন্তু, প্রযুক্তিগত বা অর্থনৈতিক কারণে সেখানে এখন তেল উত্তোলন করা হয় না।
তেল না পাওয়ার কারণ:
খনিজ তেল একটি সীমিত সম্পদ। একদিন এর মজুদ শেষ হয়ে যাবে। তেল উত্তোলনের জন্য প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক দিক থেকে উপযুক্ত না হলে তেল উত্তোলন করা সম্ভব হয় না। পরিবেশগত কারণেও তেল উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।
পৃথিবীতে বর্তমানে খনিজ তেলের অবস্থা:
বিশ্বে বর্তমানে প্রায় ১.৩ ট্রিলিয়ন ব্যারেল খনিজ তেল মজুদ রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এই মজুদ বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী প্রায় ৫০ ব চলবে বলে ধারণা করা হয়। তবে ভবিষ্যতে বিশ্বের জনসংখ্যা ও অর্থনীতির প্রসার ঘটলে তেলের চাহিদা বাড়বে। ফলে তেলের মজুদ কমে যাবে।
বর্তমানে যে পরিমাণে খনিজ তেল পৃথিবীতে রয়েছে টা কি যথেষ্ট?
বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী যে পরিমাণ তেল মজুদ রয়েছে তা যথেষ্ট। তবে ভবিষ্যতে চাহিদা বাড়ালে মজুদ কমে যাবে।
ভবিষ্যত প্রয়োজনে কিভাবে তা রক্ষা করা যায়?
খনিজ তেল একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এর অপচয় রোধ করা ও ভবিষ্যত প্রয়োজনে বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার করা জরুরি।
তেলের অপচয় রোধের উপায়ঃ
মানবাহনে জ্বালানি সাশ্রয়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ব্যবহার কমানো।
• শিল্পে তেলের ব্যবহার কমানো।
তেলের অপচয় রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার:
সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জলবিদ্যুৎ ও পারমাণবিক শক্তির মতো বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো।
জৈব জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো।
তেল মজুদের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য গবেষণা
• নতুন তেলক্ষেত্র আবিষ্কারের জন্য গবেষণা করা।
লেখক:
দল :৪
ইফতেহাজ ইরফান সায়ন (দলনেতা )
DATE: 06/11/2023
Social media