প্রতিবেদনের বিষয় :প্রাকৃতিক সম্পদ রুপা
খনিজ সম্পদ রুপা সম্পর্কে জানার জন্য প্রশ্ন সমূহ এবং তার উত্তর
উত্তর
তথ্য উৎস:iইন্টারনেট, বই ইত্যাদি ।
প্রশ্ন সমূহ
১. রুপা কি নবায়নযোগ্য না কি অনবায়নযোগ্য ?
২. রুপা কোথায় পাওয়া যায় ?
৩.রুপা বা silver এর নামকরণ কিভাবে হয় ?
৪.এটি উত্তোলনের সময় কি পরিবেশের ক্ষয় হয় ?
৫.পরিবেশের ক্ষতি হলে কিভাবে ক্ষয় হয় ?
৬.এটি কেন এতো পরিমাণের জনপ্রিয় ?
৭.এর গঠন কিভাবে হয়ে থাকে ?
৮.রুপা অর্থনীতিতে কিভাবে ভূমিকা রাখে ?
৯.এটি কোন কোন দেশে বেশি পরিমাণে পাওয়া জায় ?
১০.সে সকল দেশে এতো পরিমাণের রুপা পাওয়ার কারণ কি ?
১১.রুপার ব্যবহার কোন সময়কালে শুরু হয় ?
১২.রুপা ব্যাবহারের ধর্মীও বিধি নিতি গুলো কি কি ?
১৩.রুপা উত্তোলনের সময় পরিবেশের জেন ক্ষতি না হয় এর জন্য বর্তমানে কি করা
হচ্ছে ?
১৪.বাংলাদেশে রুপার বাজারের পরিস্থিতি কিরুপ ?
১৫.রুপা ফুঁড়িয়ে গেলে মানবজাতির কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে ?
১৬.রুপার ক্রয়মূল্য এতো বেশি কেন ?
১৭.মুদ্রা তৈরিতে রুপার ব্যবহার কিভাবে শুরু হয় ?
১. রুপা কি নবায়নযোগ্য না কি অনবায়নযোগ্য ?
উত্তর
অ-নবায়নযোগ্য শক্তি হলো এমন ধরনের জ্বালানি বা শক্তি যা নবায়ন করা যায় না এবং ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে এর
মজুত কমতে থাকে এবং সঞ্চয় সীমিত হওয়ার দরুন তা একসময় নিঃশেষ হয়ে যায়। অ-নবায়নযোগ্য শক্তি এমন উৎস
থেকে আসে যা শেষ হয়ে যায় বা পুনরায় তৈরি হতে লেগে যায় আমাদের জীবনকাল, এমনকি অনেকগুলি বহু
জীবনকালেও এটিকে পুনরায় পূরণ করা যায় না।
২. রুপা কোথায় পাওয়া যায় ?
উত্তর
প্রচুর পরিমাণে এই খনি আছে স্পেন, গ্রীস এবং জার্মানিতে। আমেরিকা আবিষ্কারের পর যুক্তরাষ্ট্র এবং
মেক্সিকোতে রুপার খনি পাওয়া গিয়েছিল। অনেক সময়ই সীসার একটি খনিজ উপাদান হিসেবে রুপার আকরিক পাওয়া
যায়। প্রাচীনকালে এই আকরিক থেকে রুপা নিষ্কাশন করা হতো।
রুপা
৩.রুপা বা silver এর নামকরণ কিভাবে হয় ?
উত্তর
এশিরীয় শব্দ "serpu" কিংবা গথ জাতির ভাষায় "silbur" থেকে সিলভার শব্দটি এসেছে যা রুপা বা রৌপ্যের
ইংরেজি প্রতিশব্দ। সিলভারের বৈজ্ঞানিক নাম আর্জেন্টাম (argentum) শব্দটি ল্যাটিন যা সম্ভবত সংস্কৃত শব্দ আর্জেন্টা থেকে
এসেছে। সংস্কৃত ভাষায় আর্জেন্টা শব্দের অর্থ "আলোর মত সাদা"।
৪.এটি উত্তোলনের সময় কি পরিবেশের ক্ষয় হয় ?
উত্তর
হ্যাঁ এতে পরবেশের ক্ষতি হয়ে থাকে ।
৫.পরিবেশের ক্ষতি হলে কিভাবে ক্ষয় হয় ?
উত্তর
রুপা উত্তোলনের সময় বিভিন্ন ধরণের খনি খনন করতে হয় । এই খনি খননের সময় বিভিন্ন জন্ত্র ব্যবহার
করা হয় । আর এই জন্ত্র ব্যবহারের সময় দূষিত ধোঁয়া পরিবেশে নিঃসৃত হয় । আর এই ধোঁয়া পরিবেশের ক্ষতি করে
থাকে । এ ছারাও খনি খননের ফলে আর পরিবেশের নানান ক্ষতি হয় । বেশিরভাগ রৌপ্য উত্পাদনের ফলে বায়ু, মাটি
এবং জলে পারদের বড় নির্গমন ঘটে । যেখানে ছোট আকারের খনি শ্রমিকদের দ্বারা রৌপ্য উত্তোলন করা হয়, সেখানে
প্রচুর পরিমাণে পারদ ব্যবহার করা হয়, যার ফলে স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
৬.এটি কেন এতো পরিমাণের জনপ্রিয় ?
উত্তর
যদিও বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীর দ্বারা সোনার পছন্দ হয়, তবে রৌপ্যও এর দাম এবং এর প্রয়োগের
কারণে একটি উচ্চ চাহিদাযুক্ত ধাতু। উপরে উল্লিখিত হিসাবে, রৌপ্য সাধারণত গয়না এবং মুদ্রা উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় এবং
সাধারণত ফটোগ্রাফি শিল্পেও ব্যবহৃত হয়।রৌপ্য হল গহনাগুলিতে সর্বাধিক ব্যবহৃত মূল্যবান ধাতুগুলির মধ্যে একটি, সোনা
এবং প্ল্যাটিনাম অনুসরণ করে। আপনি দেখতে পাবেন যে রৌপ্য গহনাগুলি মার্জিত, উত্কৃষ্ট, দীর্ঘস্থায়ী এবং অন্যান্য মূল্যবান
ধাতুগুলির তুলনায় আরও সাশ্রয়ী ।
৭.এর গঠন কিভাবে হয়ে থাকে ?
উত্তর
অনেক সময়ই সীসার একটি খনিজ উপাদান হিসেবে রুপার আকরিক পাওয়া যায়। প্রাচীনকালে এই আকরিক থেকে
রুপা নিষ্কাশন করা হতো। প্রথমে আকরিককে গুঁড়ো করে পানি দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে নেয়া হতো। পরে বিগালকের মাধ্যমে একে
গলিয়ে ফেলা হতো। এতে যে সংকর পদার্থ উৎপন্ন হয় তাকে কাঠকয়লা দিয়ে পোড়ানো হতো। বাতাসের উপস্থিতিতে রুপা
জারিত হয় না বললেই চলে, কিন্তু সীসা প্রায় সম্পূর্ণ জারিত হয়ে অক্সাইড উৎপন্ন করে। লেড
অক্সাইডের গলনাংক ৮৯৬° সেলসিয়াস আর রুপার ক্ষেত্রে এটি ৯৬০° সেলসিয়াস। এভাবে প্রায় বিশুদ্ধ রুপা পাওয়া যেতো।
অবশ্য বর্তমানকালে রুপা বিশোধনের আরও কার্যক্ষম পদ্ধতি উদ্ভাবিত হয়েছে।
৮.রুপা অর্থনীতিতে কিভাবে ভূমিকা রাখে ?
উত্তর
টাকা তৈরীতে সোনার সাথে সাথে রুপাও ব্যবহৃত হতো। রুপার দাম সোনার চেয়ে বেশি হওয়া সত্ত্বেও একসময়
তা কমতে থাকে। ১৮৭৪ সালে সোনা ও রুপার দামের অনুপাত এসে দাঁড়ায় ১:১৫.৫ এ। অস্ট্রেলিয়ায় রুপার সঞ্চ
আবিষ্কারের ফলে এই অনুপাত এসে দাঁড়ায় ১:৪৬ এ। ১৮১৬ সালে ইংল্যান্ডে দ্বিধাতুমান পদ্ধতি (সোনা-রুপা একসাথে
ব্যবহার করে অর্থের মূল্যমান নির্ণয়ের পদ্ধতি) বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে অন্যান্য দেশও এই পদ্ধতি পরিত্যাগ করে।
রাশিয়ার দু’টি মুদ্রার নাম রুবল এবং কোপেইকা। এদের নামকরণের ইতিহাসের সাথে রুপা জড়িত। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে রাশিয়ার
কিয়েভানে রুবল ব্যবহার করা হতো। এটি ছিল প্রকৃতপক্ষে একটি ২০০ গ্রাম ভরের ঢালাইকৃত দণ্ড। রুপার একটি বৃহৎ দণ্ড
ঢালাই করে এটি তৈরি করা হতো। এরপর একে ফালি ফালি করে কেটে মুদ্রা বানানো হতো। রুশ ভাষায় "রুবিত" শব্দের অর্থ
ফালি ফালি করে কাটা। "কোপেক" শব্দটি এসেছে আরও পরে। ১৫৩৪ খ্রিষ্টাব্দে মুদ্রার গায়ে বর্শা হাতে এক অশ্বারোহীর ছবি ছাপা
হয়। রুশ ভাষায় কোপেও মানে বর্শা। সেখান থেকেই এসেছে কোপেইকা।
৯.এটি কোন কোন দেশে বেশি পরিমাণে পাওয়া জায় ?
উত্তর
প্রচুর পরিমাণে এই খনি আছে স্পেন, গ্রীস এবং জার্মানিতে।
১০.সে সকল দেশে এতো পরিমাণের রুপা পাওয়ার কারণ কি ?
উত্তর
সে সকল দেশে রুপার খনি থাকার কারণে এতো রুপা পাওয়া যায় ।
১১.রুপার ব্যবহার কোন সময়কালে শুরু হয় ?
উত্তর
রূপা খনির গল্প শুরু হয়েছিল প্রায় 5,000 বছর আগে । রৌপ্য প্রথম খনন করা হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ৩,০০০ অব্দে
আনাতোলিয়াতে, যা এখন আধুনিক তুরস্কে অবস্থিত। মূল্যবান ধাতুটি প্রাচীন গ্রিসের নিকটবর্তী প্রাচ্যের সভ্যতাগুলিকে উন্নতি
করতে সাহায্য করেছিল।রুপার অস্তিত্ব সুপ্রাচীনকাল থেকেই মানুষের জানা ছিল। এমনকি প্রাচীনকালে সোনার চেয়ে রুপা দামী
ছিল। কারণ সোনা মূলত মুদ্রা ও অলঙ্কার হিসেবে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু রুপা এগুলোতে ব্যবহৃত হওয়া ছাড়াও জলপাত্র তৈরীতে
ব্যবহৃত হয়। প্রাচীন মিশরে সোনা ও রুপার মূল্যের অনুপাত ছিল ২.৫:১। রুপার তৈরি পাত্র নিয়ে একটি অদ্ভুত গল্প
রয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতকে গ্রিক সেনাপতি আলেকজান্ডার পারস্য এবং ফিনিকিয়া অধিকার করে ভারতবর্ষ আক্রমণ করেন।
এখানে এসে গ্রিক সৈন্যরা এক অদ্ভুত আন্ত্রিক রোগে আক্রান্ত হয় এবং বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য জোর দাবী জানায়। এই
রোগে সেনাপতিরা সৈন্যদের তুলনায় কম আক্রান্ত হয়েছিল, যদিও সেনাপতিরাও সৈন্যদের দুঃখ-কষ্টে সমান অংশ নিত। তখন
এর কোন কারণ বোঝা না গেলেও ২,০০০ বছর পর এখন বিজ্ঞানীরা এর একটি ব্যাখ্যা খুঁজে পেয়েছেন। সৈন্যরা টিনের পাত্রে
খাবার গ্রহণ করতো আর সেনাপতিরা রুপার পাত্রে। বর্তমানে এটি আবিষ্কৃত হয়েছে যে রুপা পানিতে দ্রবীভূত
হয়ে কোলয়েডীয় দ্রবণ উৎপন্ন করে যা ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস করে। রুপার দ্রাব্যতা পানিতে বেশ কম হলেও তা জীবাণুনাশক
হিসেবে যথেষ্ট।
১২.রুপা ব্যাবহারের ধর্মীও বিধি নিতি গুলো কি কি ?
উত্তর
বিভিন্ন ধর্মের মাঝে রুপা নিয়ে বিভিন্ন বিধি নিতি আছে। ইসলাম ধর্মের মাঝে হজরত আলী (রা) বলেন,
রসূলুল্লাহ (স) আমাকে এ আঙুলে অর্থাত্ বৃদ্ধা ও কনিষ্ঠতে আংটি পরতে নিষেধ করেছেন (ইবনে মাজাহ)।
অনুরূপভাবে রুপা দ্বারা নির্মিত অলঙ্কারও পুরুষের জন্য ব্যবহার করা জায়েজ নেই। কেননা রুপা মূলত স্বর্ণের
মতোই, তবে রুপার আংটি কোমর বন্ধনী এবং তরবারির অঙ্গসজ্জার জন্য রুপার ব্যবহার হলে তা জায়েজ ইত্যাদি ।
১৩.রুপা উত্তোলনের সময় পরিবেশের জেন ক্ষতি না হয় এর জন্য বর্তমানে কি করা
হচ্ছে ?
উত্তর
রুপা উত্তোলনের সময় পরিবেশের জেন ক্ষতি না হয় এর জন্য বর্তমানে কন কিছু করা হচ্ছে না অশাধু
লোকদের জন্য । তারা অপরিকল্পিত ভাবে রুপা উত্তোলন করছে , তারা পরিবেশের কথা চিন্তা করছে না । এর জন্য
আমাদের পরিবেশের খয় ঘটছে ।
১৪.বাংলাদেশে রুপার বাজারের পরিস্থিতি কিরুপ ?
উত্তর
বাঙালি রুপা বিক্রেতারা রুপার ক্রয় বিক্রয় করে থাকে। যা আমাদের দেশের জি ডি পি তে
ভুমিকা রেখে থাকে ।
১৫.রুপা ফুঁড়িয়ে গেলে মানবজাতির কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে ?
উত্তর
2022 সালে সিলভার 237.7 মিলিয়ন আউন্সের ঘাটতি রেকর্ড করেছে, যা রেকর্ডের সর্বোচ্চ সরবরাহ
ঘাটতি । প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে 237.7 মিলিয়ন আউন্সের ঘাটতি এবং 2021 সালে 51.1 মিলিয়ন আউন্সের ঘাটতি
পূর্ববর্তী দশকের সমস্ত ক্রমবর্ধমান উদ্বৃত্ত মুছে ফেলেছে।
সুতরাং রুপা ফুঁড়িয়ে গেলে অরথনিতির ওপর অনেক বড় থাক্কা যাবে এছারাও রুপার তৈরি নানান পণ্য তৈরি বন্ধ
হয়ে যাবে। জার ফলে সে কাজে সঙ্গে জড়িত বেক্তিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে ।
১৬.রুপার ক্রয়মূল্য এতো বেশি কেন ?
উত্তর
আমরা পূর্বেই দেখতে পেরেছি রুপার চাহিদার পরিমাণ মিলছে না এইজন্য দিন দিন রুপার ক্রয়মূল্য
বাড়ছে ।
১৭.মুদ্রা তৈরিতে রুপার ব্যবহার কিভাবে শুরু হয় ?
উত্তর
প্রচলিত মুদ্রা হিসাবে ব্যবহৃত ধাতু নিজেই মূল্যের ভাণ্ডার হিসাবে পরিগণিত হত প্রথমে রূপা, পরবর্তী পর্যায়ে
রূপা এবং সোনা দুটিই, এবং এক সময়ে তামার মিশ্রিত ধাতুর ব্যবহার হত। আজকাল আমরা তামা এবং অন্যান্য
পরিশোধিত ধাতুর মুদ্রা ব্যবহার করি।
টঙ্কন ব্যবহৃত হওয়া অধিকসংখ্যক বৃহত্তর অর্থনীতিতে তামা, রূপা এবং সোনার মুদ্রার তিনটি স্তর গঠন করত।
সোনার মুদ্রাসমূহকে বাজারি পরিমাণের ক্রয়-বিক্রয়, সামরিক খরচ আদায় এবং রাষ্ট্রের কার্যপ্রণালীতে সহায়তা
করার জন্যে ব্যবহার করা হত। রূপার মুদ্রাসমূহকে মধ্যম আকারের লেনদেন সমূহের কারণে ব্যবহার করা হত।
তাছাড়া, রূপার মুদ্রাসমূহ করের জন্য হিসাবের একক, দেয়, চুক্তি এবং রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকের আনুগত্য আদায়ের
জন্য ব্যবহৃত হত। ঠিক সেইমত তামার মুদ্রাসমূহে সাধারণ লেনদেনের টঙ্কনকে প্রতিনিধিত্ব করা হত। এই
ব্যবস্থা মহাজনপদ-এর সময় থেকে প্রাচীন ভারতে প্রচলিত ছিল।
রুপার মুদ্রা
WRITTER
NOOR
CLASS : 7
ROLL : 09
Comments